বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:১১ অপরাহ্ন

সেই দুই নার্সকে গ্রেফতার দেখাল ডিবি

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭
  • ৬১৮ বার
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) নার্স নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সেই দুই সিনিয়র নার্স মো. আরিফুল ইসলাম ও মো. সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখাল গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মহানগর গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ (উত্তর) এর মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও প্রতিরোধ টিমের বিশেষ দল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টায় এ দুজনকে ফাঁসকৃত ১১ সেট প্রশ্নসহ রাজধানীর শাহবাগের স্মৃতি চিরন্তনের পূর্ব পাশ থেকে গ্রেফতার করে। ডিবি পুলিশের ক্ষুদে বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ (উত্তর) এর উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি) শেখ নাজমুল আলমের নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শাহজাহান (পিপিএম) এর তত্ত্বাবধানে ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. শাহ নূর আলম পাটওয়ারী এর নেতৃত্বে মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও প্রতিরোধ টিম দ্বারা এ অভিযানটি পরিচালিত হয়। তাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এ দুজনকে গ্রেফতার করা হলেও তদন্তের স্বার্থে তা গোপন রাখা হয়। গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুজন প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন এবং পাশাপাশি একাধিক নার্স নেতার নাম বলেছে। গোয়েন্দা পুলিশ তাদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা জানান, গত ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত পরীক্ষার আগে পরে বিভিন্ন নার্স নেতা ও পিএসসির কয়েকজন মাঝারি ও নিম্ন পদস্থ কর্মকর্তারও মোবাইল কললিস্ট পরীক্ষা করে দেখছেন। কললিস্ট পরীক্ষার মাধ্যমেই প্রশ্ন জালিয়াত চক্রের সব সদস্যদের গ্রেফতার করার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

গ্রেফতারকৃত দুজনের মধ্যে সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) শাখার নির্বাচিত ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও আরিফুল ইসলাম স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদের (স্বানাপ আনিস গ্রুপ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এদের একজন ঢামেক জরুরি বিভাগে ও অপরজন মেডিসিন ওয়ার্ডে কর্মরত ছিলেন বলে জানা গেছে।

গত ৬ অক্টোবর রাজধানীর ১০টি কেন্দ্রে মোট চার হাজার ছয়শ সিনিয়র স্টাফ নার্স (ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি তিন হাজার ছয়শ ও মিডওয়াইফ এক হাজার) নিয়োগ পরীক্ষার বিপরীতে ১৬ হাজার নয়শ’ জন নার্স অংশগ্রহণ করেন।

শিউলি, হাসনাহেনা, রজনীগন্ধা, কামিনী নামে চার সেটের প্রশ্নপত্র ছাপে পিএসসি। কিন্তু সব সেটের প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পরীক্ষার আগে পাওয়া যায়।

একাধিক পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন, পরীক্ষা শুরুর আগে ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাওয়া যায়। পরীক্ষার হলে গিয়ে তারা দেখেন, ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

পরীক্ষার পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে জানতে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে বিষয়টি গুজব বলে উড়িয়ে দেন। পরবর্তীতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পেয়ে অনিবার্য কারণে পরীক্ষা বাতিল করে পিএসসি কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..