সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবু ধাবিতে একটি জাদুঘরের উদ্বোধন করা হয়। জাদুঘর কর্তৃপক্ষের বিতর্কিত এক উদ্যোগের ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ কাতারে। দোহা বলছে, আবু ধাবিতে চালু হওয়া জাদুঘরে বিশ্বের একটি মানচিত্র জায়গা পেয়েছে; কিন্তু এ মানচিত্র থেকে কাতারকে মুছে ফেলা হয়েছে।
উপসাগরীয় অঞ্চলের প্রবীণ এক পর্যবেক্ষকের বরাত দিয়ে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা অানাদোলু নিউজ অ্যাজেন্সি শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের শিমন হ্যান্ডারসন ‘কাতার/আমিরাতের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ছে’ শিরোনামে একটি বিশ্লেষণী প্রতিবেদন লেখেন। এ প্রতিদ্বন্দ্বিতার ভয়াবহতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জাদুঘরে স্থান পাওয়া বিশাল আকারের বিশ্ব মানচিত্র থেকে কাতারকে পুরোপুরি মুছে ফেলেছে আমিরাত।’
হ্যান্ডারসন বলেছেন, ‘আবু ধাবিতে চালু হওয়া ল্যুভর মিউজিয়ামের শিশুদের বিভাগে মানচিত্রে আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের দক্ষিণের উপদ্বীপ কাতারকে সম্পূর্ণরূপে বাদ দেয়া হয়েছে। এটি এক ধরনের ভৌগলিক বিলোপ; যা সম্ভবত ফ্রান্সের চুক্তির সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, যাতে আবু ধাবি ল্যুভর নাম ব্যবহার করতে পারে।’
ফ্রান্সের বিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামের নামে ল্যুভর আবু ধাবি মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠার জন্য গত বছর ফ্রান্সকে ৫২০ মিলিয়ন ডলার দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। পাঁচ বছর আগে এ জাদুঘরটি আবু ধাবিতে চালু হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখে গত নভেম্বরে।
উপসাগরীয় অঞ্চলের তেল সমৃদ্ধ বেরী দুই দেশের মধ্যে যখন কূটনৈতিক চরম উত্তেজনা চলছে; ঠিক তখনই ভৌগলিক বিলোপের বিষয়টি তুলে আনলেন হ্যান্ডারসন। গত সপ্তাহে কাতার আনুষ্ঠানিকভাবে আমিরাতের বিরুদ্ধে আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে।
দেশটি বলছে, গত মাসে আবু ধাবির সামরিক বিমান কাতারের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করেছে। এর ফলে আমিরাত কাতারের আকাশসীমার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে বলে দোহা দাবি করলেও আবু ধাবি তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
তবে চলতি সপ্তাহে কাতারের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ এনেছে আমিরাত। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, বাহরাইনগামী আমিরাতের দুটি যাত্রীবাহী বেসামরিক বিমানে বাধা দিয়েছে কাতারের যুদ্ধ বিমান। অস্বীকারের একই পথে হেঁটে কাতারও বলেছে, এ ধরনের কাজের সঙ্গে দেশটির সামরিক বাহিনী জড়িত নয়।
আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের এ উত্তেজনার শুরু হয় গত বছরের ৬ জুন। সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও ইরান সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে ওইদিন কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি নেতৃত্বাধীন চারটি দেশ। তবে কাতার এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, সম্পর্ক ছিন্নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো।
Leave a Reply