1. [email protected] : admi2017 :
  2. [email protected] : Theme Bazar : Theme Bazar

আমিরকে নিয়ে দোটানায় ঢাকা

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৭
  • ৩৫৯ বার
ফাইল ছবি

প্রথম দিন সিলেটের কাছে ৯ উইকেটে হার দেখে অতি বড় সমর্থকও ভড়কে গিয়েছিলেন। সে কি , এবার একদম শুরুতে এ কি হতচ্ছিরি অবস্থা ঢাকা ডায়নামাইটসের ? দলে তো তারকার অভাব নেই। গতবারের চেয়ে বরং বেশী। স্থানীয় ক্রিকেটার সংগ্রহও হয়েছে বেশ। সব মিলে সর্বাধিক তারার মেলা। কাগজে কলমে এক নম্বর দল।

সেই দল শুরুতে অনুজ্জ্বল ক্রিকেট খেলে বড় ব্যবধানে হারায় পরিণতি নিয়ে একটা সংশয়ের মেঘ এসে জমেছিল ভক্তদের মনে। কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে সে মেঘ কেটে গেছে। মাঝে বৃষ্টিতে ধুয়ে মুছে যাওয়া ম্যাচটি ব্র্যাকেটবন্দী করলে টানা চার খেলায় জিতেছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। এক কথায় ঢাকার জয়রথ সচল। চলছে উল্কার বেগে।

পাঁচ বিদেশী এভিন লুইস, কুমারা সাঙ্গাকারা, শহিদ আফ্রিদি, কাইরন পোলার্ড আর সুনিল নারিন। সাথে সাকিব, জহুরুল, মোসাদ্দেক, নাদিফ চৌধুরী ও আবু হায়দার রনি থাকছেন প্রায় নিয়মিত। মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্যামেরন ডেলপোর্টকেও খেলানো হয়েছে দুই ম্যাচ। কিন্তু ব্যাট হাতে কিছু করতে পারেননি এ প্রোটিয়া। কাজেই এখন ঢাকার পাঁচ বিদেশী মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে- এভিন লুইস, আফ্রিদি, সাঙ্গাকারা, কাইরন পোলার্ড আর সুনিল নারিন।

আর স্থানীয় তিন পেসার-মোহাম্মদ শহিদ, সাদ্দাম ও খালেদ আহমেদের যে কোন একজনকে ঘুরিয়ে বসিয়ে খেলানো হচ্ছে। সব মিলে টিম কম্বিনেশন হয়েছে যথার্থ । সামর্থের সেরা লাইনআপই খুঁজে পেয়েছেন কোচ খালেদ মাহমুদ ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাটসম্যান ও বোলারদের ব্যক্তিগত পারফরমেন্সও ভালো।

ক্যারিবীয় ওপেনার এভিন লুইস নিয়মিত ভালো করছেন। শুরুতে একদিকে রানের চাকা সচল রাখছেন। ব্যাটে ধারাবাহিকতাও বেশ। পাঁচ খেলায় দুই হাফ সেঞ্চুুরিতে তার সংগ্রহ ২০৪। আরেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কাইরন পোলার্ডও মিডল-লেট অর্ডারে সফল। পর পর দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠে দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছেন তিনি।

আফ্রিদী ব্যাট হাতে এখন পর্যন্ত (তিন খেলায় ৫৩ , সর্বোচ্চ ৩৭) ঝড় তুলতে না পারলেও বোলিং দিয়ে পুষিয়ে দিচ্ছেন। একমাত্র বোলার হিসেবে তিন খেলায় অংশ নিয়ে দু’বার ৪ উইকেট করে পেয়েছেন এ পাকিস্তানী লেগস্পিনার। সাঙ্গাকারা এখন পর্যন্ত লম্বা ইনিংস খেলতে না পারলেও (তিন খেলায় ৮০ রান, সর্বোচ্চ ৩২) গড়পড়তা তার ব্যাট থেকে ২৫ থেকে ৩০ আসছে।

আলোচিত আলোড়িত সুনিল নারিনের (৪ খেলায় তিন বার ব্যাট করে ২৩ , সর্বোচ্চ ১৬) ব্যাটিংয়ের অবস্থা অনেকটা আফ্রিদির মতোই; ব্যাটে ঝড় তুলতে না পারলেও বোলিং দিয়ে পুষিয়ে দিচ্ছেন এ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান স্পিনার (৪ খেলায় ৬ উইকেট)।

এর সাথে জহুরুল রান করছেন নিয়মিত। অধিনায়ক সাকিবের ব্যাট সেভাবে কথা না বললেও বোলার সাকিব দ্বিতীয় ম্যাচ থেকেই নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন। আর বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি ( ৫ ম্যাচে ১০ উইকেট) সাফল্যকে নিরন্তর সঙ্গী করে ফেলেছেন। ভাইটাল ব্রেক থ্রু দেয়ার পাশাপাশি প্রায় ম্যাচে সমীহ জাগানো বোলিং আর গড়পড়তা দুই তিন উইকেট করে পাচ্ছেন তিনি।

সব মিলে দারুণ এক দল ঢাকা। এ মুহুর্তে সর্বাধিক ম্যাচ জেতানো পারফরমারে ঠাসা। সেই দলে যুক্ত হয়েছেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমিরও। শনিবার রাতেই রাজধানীতে এসে পৌঁছৈছেন এ বাঁহাতি ফাস্টবোলার।

এমনিতেই দারুণ দল। শুধুই তারকায় ভরা না, ম্যাচ জেতানো পারফরমারেও ঠাসা । সে কারণে দুর্দমনীয় হয়ে উঠা। সেই দলে মোহাম্মদ আমিরের মত একজন ফাস্টবোলারের অন্তর্ভুক্তি, ঢাকার শক্তি যে আরো বাড়লো!

এই তো কয়েক মাস আগে ইংল্যান্ডের ওভালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে আমিরের এক আগুন ঝড়ানো স্পেলে বিরাট কোহলির ভারতের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইন আপ পুরে ছাড়খাড় হয়েছিল। সেই আমির এখন ঢাকা ডায়নামাইটস শিবিরে।

আমির ও ঢাকা সাপোর্টাররা অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। ভাবছেন আজ দুপুরে কুমিল্লার সাথে ম্যাচেই হয়ত আমিরের বারুদমাখা বোলিংয়ের দেখা মিলবে। এমন এক ফাস্টবোলারকে ছাড়া কি আর মাঠে নামবে সাকিবের দল?

দর্শক, ভক্ত ও সমর্থকরা তাদের মতো করেই ভাবছেন। কিন্তু ভিতরের খবর অন্যরকম। ম্যাচের আগের দিন রাতেও ঠিক হয়নি আমির খেলবেন, কি খেলবেন না। নাহ, কোন ইনজুরি নেই। আবার ভ্রমণ ক্লান্তি, অবসাদও নেই। তাহলে সমস্যা কোথায় ? আমিরের খেলা নিয়ে সংশয় কিসের?

এ প্রশ্নের সত্যিকার জবাব দিতে পারেননি কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনও। রোববার রাতে জাগো নিউজের সাথে আলাপে ঢাকা থিংক ট্যাঙ্ক নিশ্চিত করে বলতে পারেননি , আমির খেলবেনই। কিন্তু কেন এ অনিশ্চয়তা? আমিরের মত বিশ্ব মানের ফাস্টবোলার খেলবেন, কি খেলবেন না; তা বলতে কেন দ্বিধা আর সংশয় ঢাকা কোচের? খুব জানতে ইচ্ছে করছে, তাইনা?

তাহলে শুনুন খালেদ মাহমুদের ব্যাখ্যা , ‘আমি আমার দলের শক্তির জায়গায় হাত দিতে গিয়ে দশবার ভাবছি। আমার মনে হয় এ মুহূর্তে আমার দলের যে শক্তি আছে, সেটা ব্যাটসম্যান কেন্দ্রীক বা ব্যাটিং নির্ভর। আমার বিদেশী কোটায় যে পাচঁজন খেলছে (লুইস, আফ্রিদি, সাঙ্গাকারা, পোলার্ড ও নারিন ) তারা সবাই ব্যাট হাতে অবদান রাখতে পারে। রেখেছেও।’

সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘যেহেতু পাঁচজনের বেশী ফরেনার খেলানো যাবে না, তাই আমিরকে খেলাতে হলে ঐ পাঁচজনের একজনকে বাদ দিতেই হবে। আর তা দিতে গেলেই আমার দল থেকে একজন ব্যাটসম্যান কমাতে হয়। আমি আমার ব্যাটিং শক্তি কমিয়ে মাঠে নামবো কিনা, সেটাই ভাবছি। তাই বলতে পারছি না, আমির খেলবে কিনা। ওর খেলার সম্ভাবনা ফিফটি ফিফটি।’

এদিকে প্রতিপক্ষ কুমিল্লাকে সমীহর চোখেই দেখছেন ঢাকা কোচ। তার মূল্যায়ন, কুমিল্লাও বেশ সমৃদ্ধ দল। শক্ত প্রতিপক্ষ। তাই তো কন্ঠে এমন সংলাপ সুজনের, ‘দুটিই ভালো দল । দুই দলের সামর্থ ও শক্তি যথেষ্ট। দুই দলেই বেশ ক’জন ম্যাচ উইনারও আছে । আমার মনে হয় খুব ভালো খেলা হবে। মাঠে যারা সময় মত জ্বলে উঠতে পারবে, তারাই জিতবে।’

কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের কথা শুনে মনে হচ্ছে ঢাকা হয়ত আজ আমিরকে ছাড়াই মাঠে নামবে কুমিল্লার বিপক্ষে। কারণ ওপরে লুইস আর আফ্রিদিকে বাদ দেয়ার প্রশ্নই আসে না। আর পোলার্ড-নারিনও সার্ভিস দিচ্ছেন ভালো। বাদ দিতে হলে সাঙ্গাকারাকেই বাদ দিতে হয়। কিন্তু তার মেধা, মনন, প্রজ্ঞা আর অভিজ্ঞতার কথা ভাবলে আবার বাদ দেয়া কঠিন। সত্যিই মধুর সমস্যায় ঢাকা।

দেখা যাক, কোচ সুজন আর ক্যাপ্টেন সাকিব কিভাবে এ মধুর সমস্যার সমাধান করেন?

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 News Sky
Design & Developed By NewsSky.Com