1. [email protected] : admi2017 :
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১৯ অপরাহ্ন

গভীর রাতে এখনও আসছেন রোহিঙ্গারা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
  • ৫৯৭ বার

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা এখনও টেকনাফ দিয়ে বাংলাদেশে আসছেন। আগের মতো ঢল না থাকলেও নাফ নদের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রাত ২টা থেকে ভোরে সূর্যের আলো ফোটার আগ পর্যন্ত নৌকায় করে আসছেন রোহিঙ্গারা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতি রাতে প্রায় হাজারখানেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন। আর বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গারা বলছেন, রাখাইন এখনও আগুনে জ্বলছে, লণ্ডভণ্ড হয়ে আছে। সব গ্রাম প্রায় রোহিঙ্গাশূন্য।

সোমবার ভোরে সরেজমিনে শাহপরীর দ্বীপে গিয়ে নতুন রোহিঙ্গাদের প্রবেশ করতে দেখা যায়। মাদরাসায় গিয়ে কথা হয় ভোরে আসা কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে। তারা জানান, প্রাণ বাঁচিয়ে তারা বার্মার সীমান্তবর্তী একটি পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশি নৌকার মাঝিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মাঝিরা সেই পয়েন্ট থেকে তাদের তুলে নিয়ে আসেন।

নাফ নদ দিয়ে শাহপরীর দ্বীপে প্রবেশের পরই তারা আশ্রয় পান জামেয়া আহমাদিয়া বাহরুল উলূম বড় মাদরাসায়। সেখানে তাদের কয়েক বেলা খাবার দেয়া হয়। ২-১ রাত থাকার পর তাদেরকে ট্রাকে করে পাঠানো হয় কক্সবাজারের ক্যাম্পের দিকে।

 

সোমবার ভোরে বাংলাদেশে আসা মদিনা বেগম বলেন, বাংলাদেশে আসতে ১ লাখ রুপি লাগে (প্রায় ৫ হাজার টাকা)। টাকা না থাকায় আমরা এতোদিন পালিয়ে বেড়িয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আমাদের ভাই টাকা নিয়ে আসার পর আমরা রওনা হই।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুর খুইন্ন্যা পাড়া থেকে আগত হাবিবুল্লাহ ৪ সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে সোমবার বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তার কাছে সেখানকার পরিস্থিতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মাসের প্রথম দিন থেকে আমরা গ্রাম ছাড়া হয়েছি। পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম। কখনো মানুষের গোয়াল ঘরে আবার কখনো কলা গাছের বাগানের ভেতরে আশ্রয় নিয়েছি। মিলিটারিদের সঙ্গে মগদের ঘোরাফেরা করতে দেখেছি। তারা মিলিটারিদের নির্দেশে ঘরবাড়িতে আগুন দিচ্ছেন। আর সামনে দিয়ে কেউ দৌড়ে পালালে তাকে গুলি করছে। কাছাকাছি কাউকে পেলে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করছে। মগরা সরাসরি জবাই করে হত্যা করছে। আমাদের সামনে একজন বয়স্ক লোককে হত্যা করেছে। আমরা গত দুইদিন ধরে নৌকার অপেক্ষা করে অবশেষে এখানে এলাম।

 

আফতাব কামাল নামে সোমবার বাংলাদেশে আসা আরেক রোহিঙ্গা জানান, নাফের তীরে একটি পাহাড়ের ঢালে লুকিয়ে ছিলাম। আমাদের সামনে বার্মার দুইজন একটি নৌকায় কয়েকটি ছাগল নিয়ে পারাপারের উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে ছিল। মিলিটারিরা এসে তাদের গুলি করে মেরে ফেলে। মগরা ছাগলসহ নৌকাটি উল্টে দেয়।

শাহপরীর দ্বীপ সংলগ্ন নাফ নদের তীর থেকে ওপারে মিয়ানমার সীমান্তে যেসব গাছ দেখা যায় সেগুলোর রঙ বাদামী হয়ে গেছে। মগদের দেয়া আগুনে গাছগুলো পুড়ে এমন হয়েছে। এছাড়াও সোমবার মিয়ানমার সীমান্তে আগুনের ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।

গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এই হামলার পর রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর কঠোর অভিযানের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এক মাস পরও আতঙ্ক কাটছে না মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 News Padma
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com