উন্নত জাতের মুরগি পালন যুবকদের বেকারত্ব ঘোচাতে সহায়ক বলে মনে করেন অনেকেই। কারণ উন্নত জাতের একটি মুরগি ছয় মাস বয়সে ডিম দেওয়া শুরু করে। বছরে ২০০ থেকে ২৫০ ডিম দিয়ে থাকে। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগি দুই মাসেই দেড় থেকে দুই কেজি মাংস দেয়। তাই বসতবাড়িতে কম শ্রম ও খরচে মুরগি পালন করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভ করা সম্ভব। আসুন মুরগি পালন করার আগে প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নেই।
থাকার ঘর
একটি-দুটি মোরগ-মুরগি পালন করতে চাইলে মুরগির থাকার ঘরের উচ্চতা চার-পাঁচ ফুট, প্রস্থে সাড়ে ৪ ফুট এবং দৈর্ঘ্য ৬ ফুট হতে পারে। ঘরের মধ্যে ডিম পাড়ার খাঁচি, খাবার পাত্র ও পানির পাত্র রাখতে হবে। এছাড়া ঘর সব সময় শুকনো ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। খোলামেলা স্থানে ঘর বানানো উত্তম। ঘরের মেঝে তিন ইঞ্চি পুরু করে তুস, কাঠের গুঁড়া বা বালির সঙ্গে আধা কেজি গুঁড়া চূর্ণ ভালোভাবে মিশিয়ে সমানভাবে বিছিয়ে দিতে হবে। মেঝের কাঠের গুঁড়া বা তুস সাত দিন পরপর ওলট-পালট করে দিতে হবে। স্যাঁতস্যাঁতে হলে বা জমাট বেধে থাকলে তা পরিবর্তন করে দিতে হবে।
কোথায় পাবেন
দেশের বিভিন্ন স্থানে উন্নত জাতের ভালো মুরগি পাওয়া যায়। ঢাকার মণিপুর কেন্দ্রীয় মোরগ-মুরগি খামার থেকে কিংবা কৃষি খামার সড়কের প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের বিক্রয় কেন্দ্র থেকে উন্নত জাতের মুরগি সংগ্রহ করা যায়। এছাড়া বিভাগীয় শহরসহ বেশকয়েকটি জেলা শহরে সরকারি মুরগি খামার আছে। এলাকার বাসিন্দারা এসব খামার থেকে উন্নত জাতের মুরগি সংগ্রহ করতে পারেন।
আরও পড়ুন- সফল উদ্যোক্তা সোহাগের গল্প
খাবার সংগ্রহ
মুরগিকে দৈনিক সুষম খাবার খেতে দিতে হবে। প্রতিদিন মুরগিকে ১১৫ গ্রাম সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি ও ২৫ গ্রাম সবুজ শাক-সবজি বা কচি ঘাস কুচি কুচি করে কেটে খেতে দেওয়া দরকার। নিজেও সুষম খাদ্য তৈরি করতে পারেন।
খাদ্য উৎপাদন
গম বা ভুট্টা ভাঙা বা চালের খুদ ৪০০ গ্রাম, গমের ভুসি ৫০ গ্রাম, চালের কুঁড়া (তুষ ছাড়া) ২৫০ গ্রাম, তিলের খৈল ১২০ গ্রাম, শুঁটকি মাছের গুঁড়া ১০০ গ্রাম, ঝিনুকের গুঁড়া ৭৫ গ্রামসহ মোট ১ হাজার গ্রাম বা ১ কেজি সুষম খাদ্য উৎপাদন করা যায়।
রোগ প্রতিরোধ
মুরগিকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত টিকা দিতে হবে। বিনামূল্যে রানিক্ষেত, কলেরা, বসন্ত রোগের প্রতিষেধক সংগ্রহ করা যায়। অসুস্থ মুরগিকে চিহ্নিত করে দ্রুত আলাদা করতে হবে। তাছাড়া রোগাক্রান্ত মুরগির বিষ্ঠা ও লালা সতর্কতার সঙ্গে সংগ্রহ করে তা মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। এছাড়া মুরগি অসুস্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
Leave a Reply