ব্যাটসম্যান সাকিব যখন তিন নম্বরে! কিছুটা খটকা লাগছে তাই না? লাগারই কথা। সাকিব আল হাসান তো সাধারণত ওয়ানডেতে তিন নম্বরে ব্যাট করেন না। মাঝে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বেশ কিছু খেলায় তিন নম্বরে ব্যাট করতে দেখা গেছে তাকে। সংখ্যা তত্ত্বে সেটা ১৬ বার।
শুধু তিন নম্বরে ব্যাট করাই নয়, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ৫৯ ম্যাচ খেলা সাকিবের সবচেয়ে বেশি ৫১৯ রানও ওই পজিশনেই; কিন্তু ওয়ানডেতে সাকিবকে অত ওপরে নামতে দেখা যায় না। ইতিহাস জানাচ্ছে, আজকের ম্যাচের আগে একবার মাত্র ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নেমেছেন সাকিব।
সেটা ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবার তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি। ফিরে গিয়েছিলেন শূন্য রানেই। কাকতালীয়ভাবে সে ম্যাচেও বাংলাদেশ আগে ব্যাট করেছিল।
দুই ওপেনার তামিম ইকবাল (৭৮), এনামুল হক বিজয় (৮০) প্রথম উইকেটে ১৫৮ রান তুলে দেয়ার পর ভাঙ্গে উদ্বোধনী জুটি। সাকিব তিন নম্বরে নেমে জিম্বাবুইয়ান পেসার সিবান্দার বলে বোল্ড হয়ে যান।
প্রায় তিন বছর পর আজ কিম্বার্লিতে আবার ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নামলেন সাকিব। এবার আর আগের মত দ্বিতীয় বলেই সাজঘরে ফেরা নয়। শুরু থেকে আস্থার সাথে খেলা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার করলেন ২৯ রান। প্রোটিয়া লেগস্পিনার ইমরান তাহিরের বলে আউট হবার আগ পর্যন্ত মনে হচ্ছিল, আজ কিছু একটা করে ফেলবেন।
কিন্তু উইকেট ও পরিবেশ- পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেবার পর হঠাৎ ধৈর্য্যচ্যুতি। ইমরান তাহিরের ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে সামনের পায়ে অফ সাইডে ড্রাইভ করতে গিয়েই বাধল বিপত্তি। বলের ঠিক পিছনে শরীর ও ডান পা না আসায় শটের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকল না। প্রথম স্লিপে ক্যাচ চলে গেল। ওঁৎ পেতে থাকা হাশিম আমলা তা ধরে ফেললেন।
এরই সাথে শেষ হলো একটি সম্ভাবনাময় ইনিংস। ৪৫ বলে চার বাউন্ডারিতে সাজানো ইনিংসটি দীর্ঘ হলে বাংলাদেশের স্কোরলাইনও বড় হতো। কারণ অপর প্রান্তে সাকিবের মতই আস্থা ও আত্ববিশ্বাস নিয়ে খেলছিলেন টেস্ট সিরিজে অনেক কথার তীরে বিদ্ধ মুশফিকুর রহীম। সাকিব আউট হবার সঙ্গে সঙ্গে ৫৯ রানের জুটিও ভাঙ্গলো। এ জুটি বড় হলে বাংলাদেশের স্কোর আরও বড় হতো।
১৭৮ নম্বর ম্যাচে এসে দীর্ঘ ওয়ানডে ক্যারিয়াররে মাত্র দ্বিতীয় বার তিন নম্বরে নেমে একটা বড়-সড় ইনিংস খেলতে না পারলেও সাকিব আজ ঠিক পাঁচ হাজারি ক্লাবের সদস্য হয়েছেন। হলেন ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে ৫ হাজার রান ও ২০০ প্লাস উইকেট শিকারী। যে তালিকায় তিনিই সবচেয়ে দ্রুততম।
Leave a Reply