‘বাপরে, এইডা কি গরু নাকি ছোটখাটো একটা হাতি। ওই মিয়া এইডার দাম কতো।’ লালবাগ কেল্লার মোড় বেড়িবাঁধের হাটে বেঁধে রাখা চিকচিকে কালো তরতাজা গরুটি দেখে এক বৃদ্ধ দর্শণার্থী এমন মন্তব্য করে দাম জানতে চান।
বিক্রেতার চেহারায় স্পষ্ট বিরক্তির ছাপ। প্রশ্নকর্তার দিকে তাকিয়েই বলে ওঠেন, `বুড়া মিয়া দাম শুনলে আটে আর কিনলে বেচুম পাঁচে। বৃদ্ধ না বোঝার ভান করে ফের প্রশ্ন করলেন পাঁচ কি লাখে নাকি…।’ কথা শেষ করার আগেই গরুর বেপারি কিছুটা ক্ষেপা স্বরে বলেন, `চাচা মিয়া হাটের সেরা গরু এইডা। পাঁচ লাখের কমে ছাড়মু না।’ গরুটি ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যরা বৃদ্ধকে উদ্দেশ্য করে এ বলেন, এ মুহূর্তে এইডাই হাটের সেরা গরু।
এ গরুর মালিক মো. আসলাম মিয়া। কুষ্টিয়ার পোড়াদহ থেকে সোমবার দুপুরে এটিসহ মোট নয়টি গরু হাটে এনেছেন। অস্ট্রেলিয়ান প্রজাতির এ গরুর দাম হাঁকছেন আট লাখ টাকা। তার দাবি, একজন ক্রেতা চার লাখ টাকা পর্যন্ত দাম বলেছেন। তিনি ছাড়েননি। তবে পাঁচ লাখ হলে বিক্রি করে দেবেন।
জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে আসলাম মিয়া জানান, তার এক আত্মীয়ের কাছ থেকে বাছুর অবস্থায় গরুটি কিনে এনেছিলেন। ওই সময় বাছুরটির বয়স ছিল ১৭ মাস, ওজন ছিল সাত মণ। গত দুই বছর বাড়িতে রেখে লালন-পালন করেছেন। গরুটি জবাই করলে এখন ১৮ মণ মাংস হবে বলে তিনি দাবি করেন।
আসলাম জানান, গতবারও এ হাটেই সাতটি গরু নিয়ে এসেছিলেন। মোটামুটি ভালো ব্যবসা হয়েছিল। কিন্তু এ বছর এখন পর্যন্ত কেনার মতো দু-চারজন ছাড়া ক্রেতার দেখা পাননি। যারাই গরুটিকে দেখেন, তারা থমকে দাঁড়িয়ে দেখে শুধু দাম জিজ্ঞাসা করে চলে যান।
এখন পর্যন্ত হতাশ নন জানিয়ে তিনি বলেন, আগামীকাল (বুধবার) থেকে হাট পুরোদমে জমবে। ভালো গরুর ভালো দামই পাবেন বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
Leave a Reply